চোখ উঠার কারন প্রতিকার চিকিৎসা ও দোয়া

চোখ উঠা

চোখ উঠা Conjunctivitis হচ্ছে চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। সাধারণভাবে প্রচলিত কথা ‘চোখ ওঠা’ বলতে চোখ লাল হওয়া বুঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু চোখ লাল হওয়া একটি উপসর্গ মাত্র। বিভিন্ন কারণে চোখ লাল হতে পারে। যেমন-জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে, এডিনো ভাইরাসজনিত কারণে, হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসজনিত কারণে, স্কেলেরার ইনফেকশনজনিত কারণে, ইউভিয়াল টিস্যু ইনফেকশনজনিত কারণ ইত্যাদি।

তবে ভাইরাস কেরাটাইটিস বা হারপেম সিমপেক্স ভাইরাসজনিত ইনফেকশনই মুলত ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। এ ধরনের ইনফেকশনে সাধারণত এক চোখ আক্রান্ত হয়ে থাকে। পরবর্তীতে দুচোখেও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চোখে চুলকানির লক্ষণও প্রতিয়মান হয়।

চোখ উঠার কারন প্রতিকার চিকিৎসা ও দোয়া।

চোখ উঠার লক্ষণ

অপরিষ্কার বা নোংরা জীবনযাপন চোখ ওঠার অন্যতম কারণ। চোখ ওঠা রোগে চোখ লাল হয়ে যায়। আর এমনটি হয় এই কনজাঙ্কটিভার রক্তনালিগুলো প্রদাহর কারণে ফুলে বড় হয়ে যাওয়া এবং তাতে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে।

ঘুম থেকে ওঠলে চোখ আঠা আঠা লাগা, সব সময় চোখের ভেতর কিছু একটা পড়েছে এমন অনুভূতি, চোখ চুলকানো এবং জ্বালাপোড়া করা, আলোর দিকে তাকালে অস্বস্তি লাগা, সবকিছু ঘোলা ঘোলা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখের কোনায় ময়লা (যা কেতুর নামে প্রচলিত) জমা, চোখ ফুলে যাওয়া চোখ ওঠার লক্ষণ।

চোখ উঠা রোগের প্রতিকার

জনসমাগম, অনুষ্ঠান, ক্লাস ইত্যাদি পরিহার করে চলাই ভালো। এ সময়টায় অনেক শিক্ষার্থীর ক্লাস চলছে। চোখ ওঠা নিয়ে ক্লাসে উপস্থিত না হওয়াই ভালো। তবে পরীক্ষা থাকলে ওপরের নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনে স্কুলে যাওয়া যাবে। অবশ্যই কালো চশমা পরে থাকতে হবে এবং অন্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করা যাবে না

চোখে পিঁচুটি জমলে হালকা নরম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বা পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ পরিষ্কার করা যেতে পারে। তবে কোনোমতেই চোখ রগড়ানো যাবে না।

কালো চশমা রোদে বা আলোতে কিছুটা স্বস্তিদায়ক হয়। তাই বাইরে বেরোলে কালো চশমা পরুন।

চোখে কোনোমতেই হাত দেওয়া যাবে না।

একজনের ব্যবহার করা রুমাল, গামছা, তোয়ালে বা কাপড়চোপড় অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না।

হাত সব সময় সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।

চোখ উঠা কি ছোঁয়াচে

সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ কনজাংকটিভা বা চোখের প্রদাহ। একে চোখ ওঠা রোগও বলা হয়। আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সী মানুষ। তবে শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে রোগটির সংক্রমণ অধিক বলে জানা যায়। সতর্ক না হলে এ রোগ থেকে কর্নিয়ার আলসার ও অন্ধত্বের মতো গুরুতর অবস্থাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অধিক মাত্রায় ছোঁয়াচে হওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হলে নিজে সতর্ক হতে হবে, দ্রুত নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।

গত জুলাই থেকেই এ রোগের বিস্তার লক্ষ্য করা যায়। সেপ্টেম্বরে এসে বেড়েছে প্রকোপ। একসঙ্গে খেলাধুলা ও সতর্কতা ছাড়াই সংস্পর্শে আসার কারণে শিশুদের রোগটি বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

চোখের এই রোগ সংক্রামক হলেও বাতাসে ছড়ায় না। আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের সংস্পর্শে আসা কোনো জিনিস যেমন চোখে হাত দেওয়ার পর সেই হাত যেখানেই ছোঁয়ানো হয়, টাওয়েল, রুমাল ইত্যাদি অন্যের চোখের সংস্পর্শে এলে তার মধ্যেও ছড়ায়। তাই অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। 

নিজের ব্যবহার করা কাপড় কিংবা টাওয়েল আলাদা রাখতে হবে। যেখানে-সেখানে ব্যবহৃত টিস্যু ফেলা যাবে না। আর এই সময়ে বাসায় বিশ্রাম নিলে অন্য কেউ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। এটি ব্যাকটেরিয়াল কনজাংকটিভাইটিস বা ভাইরাল কনজাংকটিভাইটিস- দুটিই হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে ভাইরাল কনজাংকটিভাইটিসই বেশি হচ্ছে।

চোখ উঠার ঘরোয়া চিকিৎসা

যেসব কারণে চোখ ওঠে, সেসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে।

১. হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং চোখের পাতাগুলো খোলা রাখতে হবে।
২. চোখে কালো চশমা পরতে পারেন।
৩. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ভিটামিনযুক্ত খাবার খান।

চোখ উঠার দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি সাময়ি ওয়া শাররি বাসারি ওয়া সাররি লিসানি ওয়া সাররি ক্বালবি ওয়অ সাররি মানিয়্যি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার কানের অপকারিতা, চোখের অপকারিতা, জবানের অপকারিতা, অন্তরের অপকারিতা এবং বীর্জের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাই। (মিশকাত, আবু দাউদ)

সুতরাং যাদের চোখে সমস্যা বা অসুস্থতা রয়েছে তারা শুধু এভাবে বলবে-

اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ بَصَرِىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি বাসারি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার চোখের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাই।

চোখ উঠার ঔষধ

ঘুমের আগে অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিন।

দিনে চার - পাঁচ বার চোখে উষ্ণ লবন জলের ঝাপটা দিন।

সিক্রোফক্সাসিন আই ড্রপও চার থেকে পাঁচ বার দিতে পারেন।

রাতে ঘুমোনোর সময় দুই চোখের পাতায় অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগিয়ে শোবেন।

হাত দিয়ে পিচুটি সরাবেন না। গরম জলে তুলো ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করবেন।

বাড়িতে কারও হলে খেয়াল করে চোখে যখনই হাত দেবেন , বার বার স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন।

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দোকান থেকে কোনও স্টেরয়েড ড্রপ কিনে চোখে দেবেন না।

শেষ কথা

এই আর্টিকেল টি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন, আর্টিকেলে কোন ভুল থাকলে তা আমরা সমাধান করার চেষ্টা করবো। আমাদের দরিদ্র আইটি ওয়েবসাইটের সকল পোস্ট সবার আগে পেতে Google News ফলো করে রাখুন। এই আর্টিকেলের সকল তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত।
Doridro IT

Hey, I am Ismail , Founder of DoridroIT.com Welcome To The DoridroIT Website. facebook youtube instagram twitter

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন